ইফতারের আগে ও পরের দোয়া


Online Desk প্রকাশের সময় : ১৫/০৩/২০২৪, ৯:৩৯ অপরাহ্ণ /
ইফতারের আগে ও পরের দোয়া

চলছে মহিমান্বিত রমজান। স্বয়ং আল্লাহ তাআলাই রোজাপালনকারীর প্রতিদান দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। প্রাপ্ত বয়স্ক মুসলমান নারী-পুরুষের জন্য রোজা ফরজ। এর প্রেক্ষিতে আল্লাহর নৈকট্য ও তাকওয়া লাভের আশায় মুসলমানরা রোজা পালন করেন।

আল্লাহ তাআলা কোরআন মাজিদে বলেন, ‘রমজান মাস, এতে মানুষের দিশারি এবং সৎ পথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারী রূপে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এই মাস পাবে, তারা যেন এই মাসে রোজা পালন করে।’

মুসলমানদের ওপর রমজানের রোজা ফরজ। রোজা রাখার মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে। বিপুল সওয়াব ও অনুকম্পায় ঋদ্ধ করে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখবে আল্লাহ তালা তার আগের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।’ (বুখারি, হাদিস : ১৯০১; তিরমিজি, হাদিস : ৬৮৩)

‘হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্য রোজার বিধান দেয়া হলো, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীগণকে দেয়া হয়েছিল; যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।’ (সুরা-২ বাকারা ১৮৫ ও ১৮৩)।

সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারের আগে, ইফতার করার সময়, ইফতারের পর দোয়া পাঠের মাধ্যমে মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করতে হয়।

ইফতার ও সেহরি রমজানের অন্যতম ইবাদত। রাতের শেষ ভাগে সেহরি খাওয়া যেমন সুন্নাত ও কল্যাণের তেমনি দ্রুত ইফতার করায় রয়েছে বিশেষ কল্যাণ। এ কল্যাণ পেতে রোজাদারের ইফতারের আগে ও পরে রয়েছে বিশেষ দোয়া ও নিয়ম। তা আজ ভোরের কাগজের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

ইফতারের আগে এ দোয়া পড়া

بسم الله اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ اَفْطَرْتُ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিযিকের মাধ্যমে ইফতার করছি। (মুআজ ইবনে জাহরা থেকে বর্ণিত, আবু দাউদ, হাদিস : ২৩৫৮)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অসংখ্য হাদিসে যথাসময় ইফতার করার জন্য বিশেষভাবে তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘মানুষ যতদিন ইফতারের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেরি না করে ইফতার করবে; ততদিন তারা কল্যাণ লাভ করবে।’

ইফতারের কিছুক্ষণ পূর্বে এ দোয়াটি বেশি বেশি পড়তে পারেন

يَا وَا سِعَ الْمَغْفِرَةِ اِغْفِرْلِىْ

উচ্চারণ: ইয়া ওয়াসিয়াল মাগফিরাতি, ইগফিরলি।

অর্থ: হে মহান ক্ষমা দানকারী! আমাকে ক্ষমা করুন। (শু‘আবুল ঈমান: ৩/৪০৭)

ইফতারের সময় করণীয়

* সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা।

* ইফতারের সময় অন্য কাজে ব্যস্ত না হয়ে ইফতার করা।

* ইফতারের সময় বেশি বেশি দোয়া ও ক্ষমা প্রার্থনা করা।

* খেজুর, সাদা পানি কিংবা দুধ দিয়ে ইফতার করে মাগরিবের নামাজ জামাতে পড়া।

* ইফতারে দেরি করে জামাত তরক না করা।

* ইফতারের সময় ভারী খাবার না খাওয়া। মাগরিব আদায় করে তৃপ্তিসহ পরিমাণ মতো খাবার খাওয়া। আর তাতে শরীর থাকে সুস্থ ও সবল।

* ইফতারের সময় অতিরিক্ত খাবার খেলে জামাত ও ইবাদত থেকে বঞ্চিত হতে হয়।

ইফতারের পর বা ইফতার করার সময় এ দোয়া পড়া-

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ইফতার করাকালীন সময়ে বলতেন-

ذَهَبَ الظَّمَاءُ وَابْتَلَتِ الْعُرُوْقُ وَ ثَبَتَ الْأَجْرُ اِنْ شَاءَ اللهُ

উচ্চারণ: ‘জাহাবাজ জামাউ; ওয়াবতালাতিল উ’রুকু; ওয়া ছাবাতাল আঝরূ ইনশাআল্লাহ।’

অর্থ: ‘ (ইফতারের মাধ্যমে) পিপাসা দূর হলো, শিরা-উপসিরা সিক্ত হলো এবং যদি আল্লাহ চান সাওয়াবও স্থির হলো ‘ (আবু দাউদ, মিশকাত)

বিশেষ করে ইফতারের কিছু সময় আগে ইফতারি সামনে নিয়ে বসে বসে তাসবিহ-তাহলিল, তাওবাহ-ইসতেগফার, দোয়া-দরূদ পড়ার মাধ্যমে সময় অতিবাহিত করা। ইফতারের আগ মুহূর্ত থেকে ইফতার করার সময় আল্লাহ তালা বান্দার যে কোনো দোয়া কবুল করে নেন।

ইফতারি সামনে নিয়ে যা করবেন

ইফতারের কিছু সময় আগে ইফতারি সামনে নিয়ে বসে বসে তাসবিহ-তাহলিল, তাওবাহ-ইসতেগফার, দোয়া-দরূদ পড়ার মাধ্যমে সময় অতিবাহিত করা। ইফতারের আগ মুহূর্ত থেকে ইফতার করার সময় আল্লাহ তাআলা বান্দার যে কোনো দোয়া কবুল করে নেন।

ইফতারের সময় যে কাজগুলো করতে হয়

ইফতারের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা। অন্য কাজে ব্যস্ত না হয়ে ইফতারে মনোযোগ দেয়া। বেশি বেশি দোয়া ও ক্ষমা প্রার্থনা করা। খেজুর কিংবা সাদা পানি দিয়ে ইফতার করে মাগরিবের নামাজ আদায় করা। ইফতারের সময় ভারী খাবার না খাওয়া। মাগরিবের নামাজ আদায় করে তৃপ্তিসহ খাবার খাওয়া। তাতে শরীর সুস্থ ও সবল থাকে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ইফতারের আগে তাওবা-ইসতেগফার করা, ইফতারের করার তাওফিক দান করুন। উল্লেখিত নিয়মে ইফতার করার তাওফিক দান করুন। আমিন।