জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি আব্দুল মাজেদের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়েছে। শনিবার (১১ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টা ১মিনিটে (১২ এপ্রিল) কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তাকে ফাঁসির মঞ্চে ঝোলানো হয়।
এরপর ১৫ মিনিট ধরে তার দেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। পরে সেখান থেকে নামিয়ে উপস্থিত চিকিৎসক দিয়ে নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষা শেষে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা হলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুবুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, রাত ঠিক ১২টা ১ মিনিটে মাজেদকে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়। এরপর ১৫ মিনিট ঝুলিয়ে রাখা হয় তার দেহ। পরে সেখান থেকে নামিয়ে উপস্থিত চিকিৎসক দিয়ে পরীক্ষা করা হয়। এবং তখনই মৃত ঘোষণা করা হয়।
এদিকে, মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করতে যেসব কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন, তারা সবাই করোনা ভাইরাসের কারণে গ্লাভস, মাস্ক এবং চশমা পরেছিলেন বলে জানা গেছে।
সূত্র বলছে, ফাঁসির মঞ্চের পাশে থাকা কর্মকর্তাদের হাতে গ্লাভস, মুখে মাস্ক এবং চোখে চশমা পরা ছিল করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধে। এমনকি জল্লাদের ক্ষেত্রেও ছিল এ ব্যবস্থা।
এ বিষয়ে জেলার মাহবুবুল ইসলাম বলেন, করোনা ভাইরাস প্রোটেকশন হিসেবে আমরা সবাই এখানে মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস ও চোখে চশমা পরা অবস্থায় ছিলাম। প্রোটেকশন নিয়েই খুনি মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
রাত ১২টার পর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বাংলানিউজকে বলেন, আমরা রায় কার্যকর করতে পেরেছি।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার ফটকে জোরদার করা হয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়। একইসঙ্গে কারারক্ষীরাও দায়িত্ব পালন করেন নিজেদের।
এর আগে রাত ১০টা ৫২ মিনিটে কারাগারে গিয়ে পৌঁছেন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তফা কামাল পাশা। এরও আগে রাত সোয়া ১০টার দিকে ঢাকার সিভিল সার্জন পৌঁছেন কারাগারে। এরপর ১০টা ৪৭ মিনিটে পৌঁছেন জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বিগত দুই দশক ধরে পালিয়ে ভারত ছিলেন আব্দুল মাজেদ। গত মার্চের মাঝামাঝি সময়ে তিনি ঢাকায় আসেন। পরে গত ৬ এপ্রিল দিনগত রাত ৩টার দিকে রাজধানীর মিরপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সদস্যরা।
এর আগে ২০০৯ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আব্দুল মাজেদসহ ১২ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান, বজলুল হুদা, একেএম মহিউদ্দিন আহমেদ ও মুহিউদ্দিন আহমেদের ফাঁসি ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি কার্যকর হয়।
রায় কার্যকরের আগে ২০০২ সালে পলাতক অবস্থায় জিম্বাবুয়েতে মারা যান আসামি আজিজ পাশা। মাজেদ গ্রেফতার হওয়ার পর বর্তমানে পলাতক আসামি আছেন পাঁচজন। তারা হলেন- খন্দকার আবদুর রশীদ, শরিফুল হক ডালিম, এসএইচ এমবি নূর চৌধুরী, এএম রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেম উদ্দিন।
আপনার মতামত লিখুন :