বিলুপ্তির ২১ মাসেও হয়নি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা যুবলীগের কমিটি


তারেক আজিজ প্রকাশের সময় : ০৫/০৮/২০২৩, ২:২১ অপরাহ্ণ /
বিলুপ্তির ২১ মাসেও হয়নি  চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা যুবলীগের কমিটি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি:
২০২১ সালের ২৭ নভেম্বর বিলুপ্ত করা হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা যুবলীগের কমিটি। এরপর পেরিয়ে গেছে পৌনে দুই বছর। হয়নি নতুন কমিটি। দীর্ঘদিন কমিটি না থাকায় ঝিমিয়ে পড়েছে দলটির সাংগঠনিক কার্যক্রম। যুবলীগ করেও দলীয় পরিচয় পাচ্ছেন না নেতা নেতাকর্মীরা। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এ সংগঠনটিতে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। তবে নিজেদের ‘যুবলীগ নেতা’ পরিচয় দিয়ে দলে সক্রিয় থাকার চেষ্টা করছেন অনেকেই।

জানা গেছে, জেলা যুবলীগের সভাপতি সামিউল হক লিটন পৌর নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হওয়ার জেরে ২০২১ সালের ২৭ নভেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা যুবলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। সংগঠনের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সংগঠনের গঠনতন্ত্রের ধারা-২৩ মোতাবেক সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকায় বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো। এরপর একাধিকবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা যুবলীগের কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়া হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। পদ প্রত্যাশীদের কাছে জীবনবৃত্তান্ত নিলেও কমিটি ঘোষণা করেনি সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। ফলে পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা আর ক্ষোভ বেড়েছে।

এদিকে, যুবলীগের জেলা কমিটি না থাকায় এর প্রভাব পড়েছে উপজেলা ও পৌর শাখাগুলোতে। কাণ্ডারিহীন থাকায় অনেকটাই নিষ্ক্রিয় সাংগঠনিক কার্যক্রম।আগের মতো যুবলীগের একক ব্যানারে এখন কোনো কর্মসূচি পালন হচ্ছে না। ইউনিট কমিটিগুলো সমর্থকসহ মিছিল মিটিংয়ে অংশ নিলেও নেই সেই প্রাণচাঞ্চল্যতা। আসছে জাতীয় নির্বাচনের আগে জেলা কমিটি না হলে এর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। এমনটি ক্ষোভের সঙ্গে জানাচ্ছেন জেলার তৃণমূলের যুবলীগের কর্মীরা।

যুবলীগের নেতাকর্মীরা জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা যুবলীগের সবশেষ কমিটি গঠন করা হয় ২০১৯ সালের ২৭ জুন। কাউন্সিলরদের ভোটে সামিউল হক লিটন সভাপতি ও আমানুল্লাহ বাবু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এই কমিটি গঠনের পর জেলা যুবলীগে সাংগঠনিক গতিশীলতা বাড়ে। সামিউল হক লিটন ও আমানুল্লাহ বাবু জেলা যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের পাশাপাশি সম্মেলনের মাধ্যমে বিভিন্ন ইউনিট কমিটিও গঠন করেন।

দলীয় সূত্র বলছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কমিটি বিলুপ্তির পর সাংগঠনিক কাজে গতিশীলতা আনতে উদ্যোগী হয় কেন্দ্রীয় কমিটি। সে লক্ষ্যে পদ প্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত সংগ্রহ করেন। জেলা যুবলীগের নেতৃত্বে আসতে ২৫ জন নেতা কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে ১২ জন আহ্বায়ক ও ১৩ জন সদস্য সচিব পদের জন্য আবেদন করেছেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও কমিটির অনুমোদন হয়নি।

নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে  যুবলীগের সাবেক এক নেতা জানিয়েছেন, বিভিন্ন সময় কমিটি নিয়ে আলোচনা হলেও দলের কেন্দ্রীয় কমিটি রহস্যজনক কারণে জেলা কমিটি অনুমোদন দিচ্ছেন না। ফলে শিগগিরই কমিটি নিয়ে আশার আলো দেখছেন না তারা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আহ্বায়ক পদের জন্য জীবনবৃত্তান্ত জমা দেয়া আমানুল্লাহ বাবু বলেন, প্রায় পৌনে দুই বছর আগে কমিটি বিলুপ্ত করা হলেও দলকে সুসংগঠিত করতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা চাই নতুন কমিটি হোক। এ জন্য কেন্দ্রের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। কমিটি না থাকলে নেতাকর্মীদের সংগঠিত রাখা কঠিন। সামনে নির্বাচন কমিটি হওয়াটা জরুরি।

বিলুপ্তির ২১ মাসেও নতুন কমিটি না হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, কমিটি তো অবশ্যই প্রয়োজন। আমরা চেষ্টা করছি, যত তাড়াতাড়ি দেয়া যায়।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com