আদিবাসী নেতার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ


তারেক আজিজ প্রকাশের সময় : ১৩/০৭/২০২০, ৩:২০ অপরাহ্ণ /
আদিবাসী নেতার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
চাঁপাইনবাবগঞ্জে আদিবাসীদের সরলতার সুযোগ নিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে আদিবাসী নেতা বঙ্গপাল সর্দারের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত প্রতারক বঙ্গপালের জন্মস্থান নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুরের মাসনা গ্রামে। কথিত এই নেতা চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের আমনুরা টংপাড়ার আদিবাসীদের সাথে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে প্রতারণা করে আসছেন। সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ীর জমিকে নিজের দাবি করে বাড়ি করতে দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন ৩০ হাজার টাকা। এরকম অন্তত্ব আরো ৬ জনের কাছ থেকে একই কায়দায় অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন বঙ্গপাল। এছাড়াও টংপাড়ার মো. রফিকুল ইসলামের ছেলে রহিমকে জমি দেয়ার কথা বলে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও আদিবাসী পল্লীর মৃত কুন্নুর ছেলে শ্যামলের কাছ থেকেও ১ লাখ টাকা নিয়েছেন তিনি।

বঙ্গপাল সর্দারের প্রতারণা বাণিজ্যের সহযোগী আমনুরা টংপাড়ার শ্রী শিবলাল রাজোয়াড়ের স্ত্রী কুটিলা রাজোয়াড় ও শ্রী মানিকের স্ত্রী করুণা রাজোয়াড়। প্রতারণার শিকার শ্রী উজ্জ্বল রায় নামে এক আদিবাসী দিনমজুর চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। উজ্জ্বল রায় আমনুরা টংপাড়ার মৃত কটা রায়ের ছেলে। থানায় লিখিত অভিযোগে বঙ্গপাল সর্দার, কুটিলা ও করুণা তিন জনকেই বিবাদি করা হয়েছে। উজ্জ্বল রায় স্বাক্ষরিত অভিযোগের কপি প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি জিয়াউর রহমান পিপিএম অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান- তদন্ত চলছে, প্রতারণার প্রমাণ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বঙ্গপাল সর্দার টংপাড়া গ্রামের আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে হাতিয়ার বানিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলামের জমি দখলের চেষ্টা করছেন। জমি দখলে নিতে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের নিয়ে একটি দুর্বৃত্ত চক্র গড়ে তুলেছেন বঙ্গপাল। একইভাবে রাজশাহীর তানোরের ঝিনাইখোর গ্রামেও আদিবাসীদের সামনে রেখে জমি দখলের চেষ্টা করছেন তিনি। তার কর্মকাণ্ডকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার উসকানি বলছেন স্থানীয়রা।

এই বঙ্গপালের বিরুদ্ধে রয়েছে প্রতারণার অভিযোগ ও পুকুরে বিষ দিয়ে মাছ নিধনের মামলা। গ্রেফতারি পরোয়ানাও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এরপরও তিনি বহাল তবিয়তেই আছেন এবং জমি দখলের মতো অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন। তবে গ্রেফতার এড়াতে তিনি নিয়ামতপুরের নিজ বাড়ীতে না থেকে রাজশাহী মহানগরের রাজাপাড়ার বাগানপাড়ায় ভাড়া বাড়িতে থাকছেন। বঙ্গপাল নিজেকে ‘লাগান্তি ফাউন্ডেশন’ নামে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিলেও এ সংগঠনটির কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

জানা গেছে, ২৫ জুন আমনুরার টংপাড়ায় এসে মুসলিম সম্প্রদায়কে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন বঙ্গপাল। এ সময় গণধোলাইয়ের শিকার হন তিনি। এ ঘটনায় নাচোল থানায় বঙ্গপালের প্রতারণা বাণিজ্যের আরেক সহযোগী বিশ্বনাথ মাহাতো বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করছেন নাচোল থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলম।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে বিভিন্ন মাধ্যমে বঙ্গপাল সর্দারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com